সরকারি মুকসুদপুর কলেজের ইতিহাস
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি মুকসুদপুর কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার ইতিহাস বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের শিক্ষাবিস্তার আন্দোলনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের আনন্দ ও নবজাগরণের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার একঝাঁক শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী ও হিতৈষী ব্যক্তিবর্গ ১৯৭২ সালে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের স্বপ্ন ছিল একটি আদর্শ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য আলোর পথপ্রদর্শক হবে।
সবুজে ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি শুরুতে ছিল একটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ। সময়ের পরিক্রমায় এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করে, এবং ধীরে ধীরে একে একে নানা বিষয়ের পাঠক্রম যুক্ত হয়। কলেজটির অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত চার লেনবিশিষ্ট ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে মুকসুদপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত, যা কলেজটির যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সার্বিক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রেখেছে।
১৯৭২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর স্থানীয় জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন, শিক্ষকদের নিষ্ঠা, এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় এটি একটি পূর্ণাঙ্গ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত ও একাডেমিক উন্নয়ন আরও গতি পায়। বর্তমানে কলেজটিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এইচএসসি, অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের পাঠদান চালু রয়েছে।
সরকারি মুকসুদপুর কলেজ শুধু শিক্ষায় নয়, বরং সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। কলেজের লক্ষ্য শুধু পুস্তকগত শিক্ষা প্রদান নয়, বরং একটি মূল্যবোধসম্পন্ন, নৈতিক ও দায়িত্বশীল প্রজন্ম গড়ে তোলা।